তবুও মনে রয়ে যায়

আজ সকাল থেকেই তানজিলার ফোন বন্ধ পাচ্ছে অর্ণব। শুধু ফোন বন্ধ নয়, ফেসবুক, হোয়াটসএপ, ভাইবার সব বন্ধ। কিছুক্ষণ পর পর মোবাইল চেক করছে অর্ণব আর মেজাজ খারাপ করছে। কী এমন হল হঠাৎ সব বন্ধ!

কিছুদিন ধরেই তানজিলার সাথে মনোমালিন্য চলছে অর্ণবের। সে তো কিছুদিন পর পর এমনি হয়। তবে কি তানজিলা তার সাথে ব্রেক আপ করল! সন্দেহপ্রবণ অর্ণবের মাথায় অনেককিছু ঘুরপাক খায় আর সে অস্থির হয়।

দুপুরের দিকে তানজিলার একাউন্ট কিছুক্ষণের জন্য এক্টিভ হয়েছিল। তখন অর্ণব খেয়াল করেছে তাঁর কোনো মেসেজ সিন করেনি সে। অর্ণব যেন ভেতরে ভেতরে আরো জ্বলে উঠল। অনলাইনে এসে আমার মেসেজ দেখতে পাও না! তবে কার সাথে কথা বল? কার সাথে কী কর!

অর্ণবের মনে পড়ে শিহাবের কথা। তানজিলা সব সময় বলে শিহাব তার খুব ভালো বন্ধু। শিহাবকে একদম দেখতে পারে না অর্ণব। অনেকদিন তানজিলাকে বলেছে শিহাবকে যেন আনফ্রেন্ড করে। কিন্তু তানজিলা শিহাবের ব্যাপারে বেশ সেনসিটিভ। অর্ণবের মাঝে মাঝে মনে হয় তানজিলা তাকে ছেড়ে চলে যাবে কিন্তু শিহাবকে ছাড়তে পারবে না।

অনেক অশুভ চিন্তা অর্ণবের মাথায়। রাগ অভিমান মিলেমিশে একাকার। তানজিলার উপর রাগ হচ্ছে। ইচ্ছে করছে নাতাশার সাথে ফের কথা শুরু করতে। নাতাশা অর্ণবকে পছন্দ করে। অর্ণব জানে বা বুঝতে পারে। কিন্ত কখনো প্রশ্রয় দেয়নি। তানজিলাও বলেছিল নাতাশা থেকে দূরে থাকতে। খুব ডেঞ্জারাস মেয়ে নাকি। ছেলেদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরায়।

অর্ণব আবার মোবাইল চেক করে। তানজিলা অনলাইনে। কিন্তু এখনো সে তাঁর মেসেজ সিন করছে না। আশ্চর্য! নিশ্চয়ই শিহাবের সাথে ঘটরমটর শুরু করেছে। আমাকে ইগ্নোর! অর্ণবের মনে অভিমান জেঁকে বসে। দাঁড়াও এখনি আমি নাতাশাকে নক করবো। ও যতখুশি আমার নাকে কানে দড়ি দিয়ে ঘুরাক। আমি ঘুরবো।

বিকেলের দিকে একটু তন্দ্রার মতো লেগে এসেছিল। মোবাইলের টুং শব্দে অর্ণব লাফিয়ে উঠে। নিশ্চয়ই তানজিলা। না তানজিলার মেসেজ নয়। নাতাশা হাই দিয়েছে। ওয়াট আ কোইন্সিডেন্স! ওদিকে তানজিলার মেসেঞ্জারে সবুজ বাতি জ্বলেই আছে। অর্ণবের আর কিছু বুঝতে বাকি রইল না।

নাতাশার মেসেজের রিপ্লাই দিবে কি দিবে না ভাবতে ভাবতে অর্ণব হাই দিল।

ওপাশ থেকে সাথে সাথে রিপ্লাই আসলো হ্যালো অর্ণি!

অর্ণব চমকে উঠল। প্রথম আলাপেই অর্ণি! মেয়ে তো আসলেই ভয়ানক! এরপর হয়তো বলবে হাই হর্নি!

মোবাইল অফ করে চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগলো। আচ্ছা তানজিলা কেন এরকম করছে? কেনো সব যোগাযোগ বন্ধ করে রাখছে। সে কি আর সত্যিই চায় না তাকে!

এদিকে মোবাইলে টুং টুং মেসেজ আসতেই আছে।
অবসন্ন মন নিয়ে অর্ণব একটা ন্যাপ নিয়ে নিল। শহরের গায়ে সন্ধ্যা নেমেছে। অর্ণব ল্যাপটপে বসল একটা ফাইল ডাউনলোড করতে দিয়েছিল। হঠাৎ করেই মেইলবক্সে চোখ গেল। দেখল ৬টা মেইল এসেছে তানজিলার কাছ থেকে।

তানজিলার মোবাইল হাত থেকে পড়ে ভেঙ্গে চৌচির। তার পাসওয়ার্ড কিছু মনে নেই। নতুন মোবাইল এখনো কেনা হয়নি। তার ভাইয়ার ল্যাপটপ থেকে ইমেইলে মেসেজ পাঠিয়েছে অর্ণবকে।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত