সুড়ঙ্গ

খুব তাড়া আছে । সারা রাস্তা জ‍্যম। সারি সারি গাড়ি দাড়িয়ে আছে। কি ভাবে যাব? নাহ সিএনজিতেই যাই। যদিও টাকা বেশী খরচ হবে কি আর করা। সবগুলো বাসই যাত্রীতে ঠাসা। হঠাৎ একটা সিএনজি এসে সামনে দাড়াল। সিএনজিতে গেলেই ভালো। বাসের মতো এতো স্টপেজ নেই। সময়মতন যেতে পারলেও পারি। গাল তোবড়ানো বৃদ্ধ ড্রাইভার। কিন্তু চোখ দুটো জ্বল জ্বলে। এই জাতীয় বৃদ্ধ লোকদের মেজাজ খুব তিরিক্ষি থাকে। ভাড়া চাইল আড়াইশো। আমি কিছু বলতে গেলাম। সে সিএনজি ঘুরাতে লাগল। কি আর করা আমি বিনা বাক্য ব‍্যয়ে উঠে পড়লাম । উঠেই বললাম এমন রাস্তা দিয়ে যাবেন যেন জ‍্যমে না পড়ি।
কথাটি বলে মনে হল জ‍্যম ছাড়া কি রাস্তা আছে এই শহরে। মোবাইলটা বাইর করলাম ফেবুতে একটু ঢু মারি। উহু টাকা শেষ। ফেবুতে ঢুকছেনা।
চোখ বন্ধ করে সিটে হেলান দিলাম। ঘুমে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।
সিএনজির ড্রাইভার হঠাৎ বলে উঠলো জ‍্যম ছাড়া রাস্তায় যাব? আমি বললাম হু।
হঠাৎ মনে হল ড্রাইভার সুড়ঙ্গ মতো জায়গায় দিয়ে ঢুকছে। সম্ভবত কোন আন্ডার গ্রাউন্ড রাস্তা টাস্তা হবে। আমার চোখ খুলতে ইচ্ছে হলোনা। যেখান দিয়ে যায় যাক।আমার জায়গামতন পৌছালেই হলো।
বুঝতে পারছি সিএনজি খুব জোরে টানছে ।আমি অতল ঘুমে তলিয়ে যাচ্ছি।
হঠাৎ জোরে এক ধাক্কা লাগল আমি লাফ দিয়ে উঠলাম । নিঘাত একসিডেন্ট হয়েছে।
না কোন একসিডেন্ট হয়নি। সিএনজি ওয়ালা বলল নামেন।
আমি চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম সত্যিই তো চলে আসছি।
সিএনজি ড্রাইভার আমাকে আদেশের সুরে বললেন বিশ টাকা বেশি দিবেন। যেই রাস্তা দিয়ে আপনারে আনলাম, এই রাস্তায় সবাইরে নেই না। এটা একটা গোপন রাস্তা সবাই এই রাস্তার ঠিকানা ও জানেনা। আপনে ভালো মানুষ তাই আপনারে আনলাম।
আমি পকেট হাতড়ে বিশ টাকা পেলামনা। দশ টাকাই ভা্ংতি পেলাম। মনে মনে বিশ টাকা না থাকার জন্য আক্ষেপ হলো। লোকটার ওপর মায়া হলো। কিভাবে কিভাবে এত তাড়াতাড়ি নিয়ে আসল কিছু টেরই পেলাম না। সিএনজি ওয়ালা চলে গেল।আমি মোবাইলটা বের করে দেখলাম সাড়ে নয়টা বাজে। সিএনজিতে উঠে ছিলাম সাতটায় । সাড়ে নয়টা বাজল কি ভাবে!
কি হলো বিষয়টা কিছুই বুঝতে পারছিনা। মাথায় কিছু ঢুকছেনা।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত