মাছের ডিমের হালি

ন্তর্পণে হেটে এসে ছেলেটি বলল, মাছের ডিমের হালি কতো করে?

    পাগল! নাহ, বড়লোকের ছেলে। তাদের ভাবসাব আলাদা হয়। চেহারায় মেয়েলী গঠন থাকে। কথা বলে ধীরেসুস্থে। শব্দগুচ্ছ গলা থেকে বের হইতে লজ্জা পায়; তাই ঠোঁটের অগ্রভাগ থেকে শব্দগুচ্ছ না আইসা গলা থেকে আসে। আর শব্দচয়ণে এমন পরিপাটি যে শব্দের উপর শব্দ ঝাপিয়ে পরে দূর্ঘটনা ঘটায় না। একটার পর একটা শব্দ দাম্ভিকতার সাথে বাহির হইতে থাকে। 

    মাইমল চোখ বড় করে, মাছের ডিমের আলি অয় না। 

    তাহলে কি হয়?

    কেজি, কয় কেজি নিবেন।

    ছেলেটি অনেক ভাবনাচিন্তা করে উত্তর দেয়, দশ কেজি দেন তাহলে।

    মাইমল ওজন করে বস্তা ভরে। এক বস্তা মাছের ডিম দেখে ছেলেটি ভ্যাবাচ্যাকা খায়, এতো ডিম কে খাবে! 

    আরে ভাই টাকা দেনতো। টাকা দিয়া আপনার পথ মাপেন। 

    কতো? আর পথ মাপবো কেন? আর এতো ডিম কে খাবে?

    তা আমি কেম্নে কমু!

    কতো কেজি দিয়েছেন এখানে?

    আরে ভাই, দশ কেজি চাইছেন ; তাইলে কি বিশ কেজি দিমু! দশ কেজিই দিছি। 

    দশ কেজিতে এতোগুলো হয়! 

    আরে ভাই পাগল নাকি! মাইমল বলতে চায়, কিন্তু তার গলায় শব্দগুচ্ছ লুটোপুটি খেয়ে পরে থাকে। মক্কেল একটা পাওয়া গেছে। মনে মনে তাই হিসাব মেলায়, তাইলে কতোটুক হয়!

    আমি তো মনে করেছিলাম অল্প কিছু হবে। যাতে হাতে করে নেওয়া যায়।

    দাড়ান আবার মাইপা দেখি। 

    মেপে মেপে বস্তা থেকে মাছের ডিম নামাতে থাকে। নামাতে নামাতে শেষে এক পেকেট হয়। এক কেজি। কিন্তু ছেলেটা তার কি বুঝে! ব্যাবলার মতো চেয়ে থাকে। 

    মাইমল বলে, আইজকাইল পাল্লাডা সমস্যা করতাছে। এইযে এখন হইছে দশ কেজি। 

    কতো টাকা?

    পাঁচ হাজার। 

    ছেলেটি টাকা দিয়ে মাছের ডিম নিয়ে চলে যায়। 

    মাইমলের চোখে মুখে হাসি। এমন মক্কেল কয়ডা পাইলে ধনী হইয়া যামু। তাই মনে মনে ধনের হিসাব মেলায়। 

    বড়লোকের পোলাপান। টাকা তাদের হাতের ময়লা। দেশ বিদের খবর রাখে ঘরে বসে। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতাই ধরা খাইয়া যায়। মাছের ডিমের হালি। পাগল!

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত