ভিলেজ পলিটিক্স


গ্রামের চা দোকানে লোকজনের খুব ভিড়। অনেক লোক আজ চা দোকানে জড়ো হয়েছে। তাদের মনে অনেক ক্ষোভ। যুবক বয়সী হেলাল বলে, ‘শোনেন ভাইয়েরা আমরা রফিক মেম্বাররে তো গতবার জিতাইসি। হেতে হইতো না যদি আমরা না চাইতাম। হেতে কি করলো! হেতে তো গ্রামটারে বেচি দিল। এবার যদি আরেকবার রফিকরে মেম্বার বানাই তাইলে তো হেতে ঘরে ঘরে ঢুকি ডাকাতি কইরব। আমরা আর এই ডাকাত মেম্বাররে আমাগো জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতাম চাই না। গ্রামের  মানুষ রফিক মেম্বারের উপর খুব বিরক্ত।’
ষাট বছর বয়সী ছানাউল্লাহ বলে, ‘শোনেন ভাইজানেরা, আমার গরু বেচার ৭০ হাজার টাকা আমার থেইকা জোর করি লইয়া গেছে গা রফিক মেম্বার। আমি কিচ্ছু করতে পারি ন। এই গ্রামের অবস্থা এত খারাপ কোনো দিন আছিল না। আমি কারে বিচার দিমু। আমি মেম্বাররে বহুত অনুরোধ করছি আমারে আমার টাকাটা ফেরত দিবার লাই। হেতে আমার কথা হুনলো না। হেতে আমারে আরো হুমকি দিছে হেতে নাকি আমারে গরু চুরির মামলায় জেল খাটাইব। আমি গরীব মানুষ। গত কোরবানীতে গরু বেচি ৭০ হাজার  টেয়া পাইছিলাম। এই টেয়াটা দিয়া আমার ছয় মাস চলি যাইত। কিন্তু অহন আমি পথে বইছি। আমি গ্রামবাসীর কাছে এর একটা বিচার চাই। ছান্নাউল্লাহ কেঁদে ফেলে উপস্থিত সবার সামনে। আর বলে, হেতে কি ভোটে মেম্বার হইছে নে? হেতে তো জোর করি মেম্বার অই গেছে। টেয়া লাইগলে চার পাঁচ হাজার লইতে পারস। তাই বলে কি হেতে সত্তর হাজার টেয়া মারি দিব!
ভিড়ের মধ্য থেকে নুরুদ্দিন মিয়া বলে, ‘আমারও একখান অভিযোগ আছে।’ সবাই বলে, ‘কন কন।’
নুরুদ্দিন মিয়া ভাঙা গলায় সবার সামনে বলে, ‘আমার পোলাডা মেট্রিক পাশ করছিল। তাই হেতেরে খেয়াল করছিলাম, পুলিশে ঢুকায় দিমু। হুনছি, মেম্বারের লগে নাকি উপরের মহলের অনেক খাতির। মেম্বারের লগে যোগাযোগ করলাম। মেম্বারে কয় পঞ্চাশ হাজার টাকা লাগবো। তাই মেম্বাররে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলাম। এর মধ্যে হুনলাম, পুলিশে লোক লওয়া হইয়া গেছে। মেম্বাররে জিজ্ঞাসা কইরলাম, হেতে কয় আরো কয়দিন সবুর করেন। আমনের টেয়া মারি খাইতাম ন। আইজকা দুই বছর হইয়া গেল, আইজও টেয়াটা মেম্বারের তুন ফেরত পাই ন। টেয়া ফেরত চাইবার মত হে সাহস আমাগো নাই। আপনেরা হয়তো এই ঘটনাটা জানেন না। তাই আপনাগো কাছে বিচার দিলাম। আপনারা এখানে যুবক ভাইয়েরা আছেন। তারা কিছু একটা করেন। আমি মনে করি, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যদি এই রফিক মেম্বার আবারো মেম্বার হয় তাইলে কিন্তু এই গেরামে ঘরে ঘরে ডাকাতি হইব।’
গ্রামের মানুষের অনেক ক্ষোভ। এতদিন সব ক্ষোভ চাপা ছিল। আজ সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ হয়েছে। গ্রামের অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে রফিক মেম্বারের বিগত দিনের কার্যকলাপের আমলনামা নিয়ে বসেছে।
সভার খুব সামনে বসে জয়নাল বলে, ‘আমি একখান কথা কইতে চাই। সবার অনুমতি চাই।’ জয়নালের টাকা পয়সা আছে। ওমান থাকে সে। বিদেশে থেকে ভালোই টাকা পয়সা ইনকাম করেছে সে। সবাই বলে, ‘হ কও কও।’ জয়নাল বলতে থাকে, ‘আমি বহুত বছর বিদেশে থাকি কিছু টেয়া পয়সা কামাইছিলাম। সেই টেয়া পয়সা দিয়া একখান ঘর পাকা করলাম। কিন্তু আপনেরা হয়তো অনেকেই জানেন না, রফিক মেম্বার আমার থেইকা এক লাখ টেয়া চাঁদা নিছে। হেতেরে চাঁদা দিবার কাম কি! হেতে আমাগো মেম্বার হইছে, কোনো খানে অসুবিধা হইলে মিটমাট করি দিব। হে মিয়া আগায় আইসা সমাধান করি দিব। আর হেতে কি না আমার কাছ থেইকা এক লাখ টাকা লইয়া গেল। আর কইছিল, যদি টেয়া ন দিই তাইলে ঘর করতে দিব না। আমি টেয়া দিতে চাইছিলাম না, আমার ইটের গাড়ি, বালুর গাড়ি হেতের পোলাপাইন আটকায় রাখছিল। আমার মেস্ত্রীরে কাম বন্ধ কইরবার হুমকি দিছে। তাই আমি নিরূপায় হইয়া তারে টেয়াটা দিতে হইছে। আমি এখন আপনাগো কাছে এর বিচার চাই।’
সভায় বসে আছে গ্রামের আবুল কাশেম। তিনি বললেন, ‘আমিও কিছু কথা কইবার চাই।’ সবাই বলল, ‘হ কন আপনে।’  তিনি বলতে লাগলেন, ‘দুই বছর আগে আমার চাচাতো ভাইগোর লগে জায়গা জমিনের মাপজোখ লইয়া একখান সালিশ হইছিল। সেই সালিশের দলিল  আামার থেইকা লইয়া আমারে আর ফেরত দে ন। এখনও রফিক মেম্বারের কাছে জায়গার দলিল রইয়া গেছে। হেতে রে আমি বহুত বার কইছিলাম, হেতে আমার কথা হুনবারও চায় না। এই দলিল না পাইলে আমার অস্তিত্ব লইয়া হুমকিতে পড়মু। আমার জমি হয়তো মেম্বারে দখল করি নিব। এখানে উপস্থিত সবার কাছে আমি বিচার দিলাম। আপনেরা এর একটা সমাধান করি দেন। আমি বহুত কষ্টে আছি এই ব্যাপারখান লইয়া। এইখানে যুবক যারা আছে, তারা যদি প্রতিরোধ গড়ে তুলি তাইলে কিছু একখান করতে পারে, তাইলে আগামী ইলেকশানে হেতে আর মেম্বার হইতে পারত ন।
গুয়া মিয়া নামের একজন বলে, ‘আমিও কিছু কথা কইবার চাই। সবাই সায় দেয়, কও কও।’ গুয়া মিয়া বলতে শুরু করে, ‘আমার বয়স বাহাত্তর চলতেছে। আমি কোনো কাম কইরতে পারি না। হুনছি সরকার বলে বুড়াদেরকে বয়স্ক ভাতা দেয়। গেরামের অনেকেই এই ভাতাটা পায়। আবার অনেকে পায় না। তো আমি মেম্বাররে কইছিলাম, আমারে একখান বয়স্ক ভাতা করি দিবার লাইগা। মেম্বার আমারে কয় বয়স্ক ভাতা করি দিতাম পারি যদি আমারে পাঁচ হাজার টেয়া দাও। হেতে মেম্বার হইছে জনগণের সেবা কইরবার লাইগা। আমাদের জনপ্রতিনিধি। আমাদেরকে সুযোগ সুবিধা করি দিব। হেইডা না করি দিই, আমার মতো বুড়া মাইনষের কাছ থেইকা টেয় দাবি করে। আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম। আল্লাহ যেন এর বিচার করে। আমি মেম্বাররে বহুত অনুরোধ করছি আমারে বয়স্ক ভাতাটা করি দিবার লাইগা। হেতে করি দেয় না। আমার চলতে খুুব কষ্ট হয়।’
করিম মিয়া নামের একজন বলে, ‘আমি কিছু কইতাম চাই।’ তাকে বলার জন্য অনুমতি দেয়া হল। করিম মিয়া সবার দিকে তাকায়। সে বলবে কি না ভেবে পায় না । তবুও সে বলে, ‘দেখেন আমি রফিক মেম্বাররে কইছিলাম, আমার বোনের কাবিনের টেয়া আগের স্বামীর থেইকা লই দিবার লাই। চার লাখ টাকা কাবিন। মেম্বার কয়, আমি কাবিনের টেয়া লই দিতে পারমু তবে আমারে অর্ধেক দিয়া দিতে হইব। তবুও তারে কইলাম যে, দেখেন, টেয়াটা আমার বোনের। আপনে লইয়া কি কইরবেন? হেতে আমারে জবাব দেয়, তোমরা এই টেয়া জীবনেও লইতে পারবা না। তবু হেতে ত্রিশ হাজার টেয়া মারি দিছে। আমি এর বিচার চাই।’
কলেজ পড়ুয়া আবির কিছু বলতে চেষ্টা করে। তাকে কিছু বলার জন্য অনুমতি দেয়া হল। সে বলে, ‘কয়েক মাস আগে আমি একখান স্ট্যাটাস দিছিলাম ফেসবুকে। পোস্ট ছিল, এলাকায় চাঁদাবাজি বেড়ে গেছে। এই স্ট্যাটাস  দেওয়ার পর মেম্বার আমারে ডাইকা লয়। ডাইকা লইয়া মেম্বার আমারে ইচ্ছামত চড় থাপ্পড় মারছে। সামান্য এই স্ট্যাটাসের লাই আমারে এভাবে মারতে অনব নাকি! মেম্বার আমারে হুমকি দিছে, সে দয়া কইরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে নাই। পুলিশরে ডাকে নাই। সে নাকি ইচ্ছে করলে পুলিশে দিয়া দিতে পারে আমারে। কত বড় হারামজাদা এই মেম্বার দেখেন। এই লোক নিজেরে একটা কিছু মনে করে। আমরা চাই না, সে আবার মেম্বার হইয়া এলাকার মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করুক। আমার লগে যারা হাঁটে সবাইরে নিষেধ করি দিছে আমার লগে যাতে না হাঁটে। আমি কি খারাপ পোলা কন? আমি মাঝে মাঝে গ্রামের অন্যায় অত্যাচার লইয়া ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে চাই। তয় দিতে পারি না। ভয় করে।
কুলসুম বেগমও এই সভায় এসেছে। তিনি কিছু বলতে চান। তাকে বলার পারমিশন দেয়া হলো। তিনি বলেন, ‘মেম্বারের লগে আমার পোলাটা আগে হাঁটত। গত ছয় মাস ধরে আর হাঁটে না। এটাই কাল হয়ে দাঁড়াইল। আমার পোলারে মেম্বারে ইয়াবা মামলায় ফাঁসায় দিছে। পোলাটা এখনও জেলে। আমার পোলা ভালো থাকতে চায়। কিন্তু সেটা মেম্বার হইতে দিব না। গেরামের সব পোলাপান নষ্ট নষ্ট করি দিতাছে। মেম্বার চায় গেরামের সব পোলাপান তার পিছে হাঁটুক। সন্ধ্যার সময় পোলারা বাইরে কেন থাকব? সন্ধ্যায় তো থাকব পড়ার টেবিলে। আামার পোলাটার লাই বহুত কষ্ট পাই আমি। পোলার জীবনটা শেষ হইয়া গেল। এই মামলার বোঝা আমারে বইতে হইব।  পোলাটার  বাপ থাকলে আমার এই সমস্যা হইত না। আমার একটা মাত্র পোলা। আপনার যারা যুব সমাজ আছেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনেরা ভালো একটা মেম্বার নির্বাচন করেন। যাতে করি এই এলাকায় আর দানবের জন্ম না হয়।’ কুলসুম বেগমের ছোট খাটো বক্তৃতা শেষ হয়।।
সভায় যারা এসেছে সবারই ছোট বড় ক্ষতি করেছে রফিক মেম্বার। সবাই খুব ক্ষ্যাপা তার উপর। কেউ কেউ বিশেষ করে গ্রামের যুবকদের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে।
কিছুক্ষণ বিরতির পর আবার সভা শুরু হয়। এবার সবার সামনে আসে রকু মিয়া। সে মূলত কৃষক। অন্যের জমিতে বর্গাচাষ করে। আবার গরুও পালে চার পাঁচটা। রকু মিয়া বলে, ‘গত কোরবানরে ঈদে আমি যে গরুটা এক লাখ বিশ হাজার টেয়া বেইতে চাইছিলাম হেইটা মাত্র বিশ হাজার টেয়া দি আর টেয়া দে ন রফিক মেম্বার। মেম্বাররে কইলাম, আমি এইটা হাঁটে নিয়া নিয়া গেলে এক লাখ বিশ হাজার টেয়া বেইচতে পাইরতাম। হেতে কয়, তিরিশ হাজার টেয়া দিছি যেও বেশি হইয়া যায়। লস হইল। আমার ভাগে কি পড়ল। অমি তো পথে বসি গেলাম। আপনেরা সবাই কিছু একটা করেন এই মেম্বারের বিরুদ্ধে। গেরামবাসী চাইলে হেতেরে হটাইতে বেশিদিন লাগবো না।’
ছালামত উল্লাহ। এই গ্রামের বাসিন্দা। সে বলে, ‘মেম্বারের বিরুদ্ধে আমারও একখান অভিযোগ আছে। সেটা হইল, আমার কিছু গাছ আছিল। মনে করছিলাম, সেগুলো সো মিলে লইয়া যাইয়া কাঠ করমু। ওমা, কি কাঠ করমু, আমার গাছগুলো হেতে আমার সামনে থেইকাই লইয়া গেল। আমি বাধা দিলে মেম্বার কয়, চুপ একদম। সামনে আইলে এক্কেরে দা দিয়া হাতের কবজি কাটি ফেলামু। আমি আর কিছু কইতে পারলাম না। জানের ভয় তো আমারও আছে। এই গেরামে সবার লগেই দ্বন্দ্ব তৈয়ার করি দিছে হেতে।’


পরদিন  সন্ধ্যা বেলা। প্রাইমরী স্কুলের মাঠে অনেক লোক জড়ো হয়। সবার হাতে বড় বড় লাঠি, বাঁশ। সবার মাথা খুব গরম। উত্তেজনায় ফেটে যাচ্ছে একেকজন। তারা মেম্বার রফিককে দেখে নিতে চায়। উত্তেজিত জনতার একজন বলে, ‘আইজকা রফিক্কারে এক্কেরে পিঠের ছাল তুলি ফেলামু। হেতের কোন বাপ আছে চামু। যে লোক এই কথা বলে, সে কিছুদিন আগেও রফিক মেম্বারের সাথেই হাঁটত। মেম্বারে যা বলত সব শুনত। রফিক মেম্বারের বিশ্বস্ত লোক বলে যারা পরিচিত তারা প্রায় সবাই আজ মেম্বারের উপর ক্ষ্যাপা। তাই তাকে আজ মারতে স্কুল মাঠে তারা জমায়েত হয়েছে।
রফিক মেম্বারের খাস লোক বলে পরিচিত দুলালও লাঠি নিয়ে এসেছে। সে উদ্ধত ভঙ্গিতে বলে, ‘কেউ ভয় পাইয়েন না। আইজকা রফিক মেম্বাররে দেইখা লমু আমরা।’
প্রায় পঞ্চাশ জন লোক রফিক মেম্বারের বাড়িতে এসেছে। রফিকের বাড়ী এখন পাকা। মেম্বার হয়ে সে ঘর বাড়ী পাকা করেছে। পাঁচ বছর আগে রফিকের বাড়ি ছিল উপরে টিন আর নিচে বেড়ার। এই পাঁচ বছরে মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা খেয়ে সে অনেক টাকার মালিক হয়েছে।
রফিক মেম্বারের সাবেক চ্যালা দুলাল আরো বলে, ‘এই রফিক্কা তুই যদি ঘরের তুন বাইর না হস তাহলে তাইলে তোর ঘরে আগুন লাগায় দিমু।  তারপরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দ আসে না। কিছুক্ষণ পর রফিক মেম্বারের বৃদ্ধ মাতা বের হয়ে আসে আর বলে, ‘রফিক তো বাড়ীত নাই।’ চার পাঁচজন ঘরে ঢুকে তল্লাশী করল। খাটের নিচ, আলমারী, রান্না ঘর সব জায়গায় খোঁজা হল তাকে। কোথাও জনতা রফিককে খুঁজে পেল না। একজন বলল, ‘শালা মনে হয় পলায় গেছে। শালারে আইজকা পাইলে এক্কেরে হাড্ডি গুড়ি বাইর কইরা দিতাম। হারামিটা গেরামের মানুষকে অনেক কষ্ট দিছে।’
আরেকজন বলে, ‘শালা পালাইছে কই?’ এই কথা যে বলে সে এক সপ্তাহ আগেও রফিক মেম্বারের অফিসে বসে থাকত।
সেদিন রাতে রফিক মেম্বার কে না পেয়ে তার অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়।


ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হয়েছে এক সপ্তাহ হয়েছে। নির্বাচনে রফিক মেম্বার গো হারা হেরেছে। তবে সবার মুখে আবার রফিক মেম্বারের আলোচনা। গুয়া মিয়া বলে, ‘রফিক তো চিটাগং শহরে মাইয়া লই ধরা খাইছে। শালা বিয়া শাদী করে ন। হোটেলে যাইয়া মাইয়া লই ফূর্তি করে। কত বড় জাউরগা।’

করিম বলে, ‘আমি হুনছি, মাইয়া যেইটার লগে ধরা খাইছে হেইটা আবার দুই বাচ্চার মা। জামাই বলে বিদেশ থাকে।’
নুরুদ্দিন বলে, ‘হেতে বহুত জাগাত অকাম কুকাম করি বেড়াইছে। মানুষ জানে না।’
এভাবে কথা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে।
আবির বলে, ‘আই কদিন আগে রহিমার লগে কথা কইছি যে হেতে আরে যে শাসানি দিছিল, তো অহন তো হেতের আসল রূপ ধরা পড়ল।’
সেদিন সন্ধ্যায় গ্রামের চা দোকানে সাবেক মেম্বার রফিকের হোটেলে নারীসহ ধরা পড়ার খবরে ব্যাপক আলোচনা হয়। প্রবাসী জয়নাল বলে, ‘আইজকা এই চা দোকানের যত বিল আইছে সব আমি দিমু কারণ রফিক নামের এক ডাকাতের পতন হইছে।’

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত