বৈশাখে ভােরের কুয়াশা (পর্ব-২)

দুই.
কাইয়ুম চাচা, রমিজ চাচা ও কাওছার ভাই হাঁটছেন।প্রতিদিন ফজরের পর ঘণ্টাখানেক হাঁটেন তারা।প্রতিদিন ভোরে খোলা বাতাসে হাঁটলে ছোটবড় রোগ থেকে সহজে বাঁচা যায়।এই মন্ত্র ছোটবেলা থেকেই মেনে চলছেন তারা।অবশ্য গ্রামের লোকজনের এই অভ্যাস এখনো আছে।

তারা হাঁটছেন।কিছুদূর হাঁটার পর দেখা হলো করিমন বিবি, খাইরুল, ফখরুলের সঙ্গে।তারাও হাঁটছেন।দেখা হতেই রমিজ চাচা বললেন-
-‘আপনেরা কিমুন আছুইন।বালা আছুইন নি’।
-‘বালা আছি আমরা।’
-‘আওরে কি হানি টানি আইসে?’
-‘হ, আইছে না।’
-‘একবার ত হুনসিলাম আওরে অততা ফানি আয়সে।’
-‘না, আইসে না।’
-‘আবহাওয়ার ত অবস্থা বালা না।’
-‘হয় হয়’।
-‘এবারে গরম অইলেও বালা ধান অইছে।’
-‘টিগ আছে আপনেরা হাঁইট্টা যাইন, আমরার কাজ আছে যাইন।’

তিন.
সালমান হাসপাতালে পৌঁছেই শশীরে ফোন দিলো।
-‘কই তুই? আমি রিসিপশনে আছি।’
-‘চলে আস, আমি চার তলায় আছি।’

সালমান চলে আসল।শশীর সঙ্গে দেখাই হতেই ফোন।
-‘হ্যালো সালমান তুই কইরে?’
-‘আমি ত বাইরে আছি।হাসপাতালে আসছি।’
-‘শোন, সন্ধ্যায় আসতে পারবি?’
-‘কই আসব’?
-‘ক্যাম্পাসে।’
-‘না, আজ মনে হয় পারব না।’
-‘ঠিক আছে বাই।’

কামালের সঙ্গে ফোনে কথা শেষ করতেই দেখলো শশী বিষণ্ন মনে বসে আছে।চোখ ছলছল করছে।তার নিরীহ চোখের মায়ায় যেন রাজ্যের বিষণ্নতা।সালমান কাছে গিয়ে বসলো।
-‘শশী, চিন্তা করিস না।আল্লাহর উপর ভরসা কর।সব ঠিক হয়ে যাবে।’
শশী তাকিয়ে আছে সালমানের দিকে।এমন সময় নার্স এসে বললো
-‘এই ওষুধগুলো নিয়ে আসুন।’

নার্সের কাছ থেকে ওষুধের স্লিপগুলো নিয়ে ওরা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগলো।আর সালমান বলল
-‘দুপুরে খাইছস? চল ওষুধ কেনার আগে হোটেলে যাব। খেতে হবে।’
শশী বলল,
-‘না, থাক।’

সালমান আর শশী হাসপাতালের নিচে নামল।তখন বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

চলবে..

ছবি: ছবিটি ২৫ বৈশাখ (৮ মে ২০২৩) কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থেকে ভােরে তোলা।ছবিটি তুলেছেন লেখক নিজেই

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত