প্রতিদিন একদিন

বয়সের তুলনায় সালামকে দেখে বড় লাগে। কিছুদিন হলো গালে খোচা খোচা দাড়ি গজিয়েছে। এর সাথে মিল রেখে সে ছোট করে গোফ রেখেছে। সালামের বাবা-মা হয়তো লম্বাচড়া জাতের ছিল, সেই ভান পেয়েছে সে। ছোটবেলায় অত বুঝা না গেলেও এখন স্পষ্ট বুঝা যায় যখন আবদুল আর সালাম দুইজনে পাশাপাশি দাঁড়ায়। তখন আবদুলকে আর তার বাবা মনে হয় না। তবে আবদুল এখনও নিজেকে সালামের গার্জেন ভাবে।

সকাল সকাল সালামের মুখের দিকে চেয়ে থাকে আবদুল। কোলের শিশু সালামকে সে পেয়েছিল এইরকমই কোন ভোর সকালে সদর হাসপাতালের পিছনে। কাজে ব্যস্ত থাকায় প্রথমে খেয়াল করেনি, পরে দূর থেকে দেখে এক মহিলা পুটলি হাতে গেইটের কাছে ঘুরঘুর করছে। সেই মহিলাটা হয়তো তার সামনে দিয়েই এসেছিল। মহিলাটা কি তখন কাঁদতে কাঁদতে এসেছিল? নাকি ভীত হয়ে? এখন আর মনে পড়ে না কিছু। শুধু এতটুকু মনে আছে, মহিলাটা চলে যাবার পরে কৌতুহলী হয়ে সেইখানে গিয়ে সালামকে খুঁজে পায় । তখনও সালাম ঘুমিয়ে ছিল এইভাবে। কুড়িয়ে পাওয়া শিশুকে বাড়িতে আনার পরে এলাকায় কম কথা হয়নি। বিয়ে না করে বাচ্চা হয় কিভাবে এইসব কথাও শুনতে হয়েছে আবদুলকে। শিশু সালামের মুখের দিকে চেয়ে সবকিছু সহ্য করেছিল সেইদিন। সকাল সকাল পুরনো কথা মনে পড়ে আবদুলের।

ওই সালাম ওঠ, কামে যাইতে হইবো – ব্যস্ততার ভান করে আবদুল ডাক দেয়। এক ডাকেই সালাম উঠে পড়ে। আবদুল চেয়ে দেখে ঘুমের সেই হাসিমুখটা নাই আর। সালাম হয়তো জেগেই ছিল এতক্ষণ। আবদুল যে প্রতি সকালে তার দিকে চেয়ে থাকে এটা টের পেয়েও ইচ্ছা করে চোখ বুজে থাকে।

গাড়ি কিন্তুক অহনই আয়া পড়বো, রেটি হইয়া ল – আবদুল আবার ডাক দেয়। ভাবলেশহীন ভাবে উঠতে উঠতে সালাম কোন কথা বলে না। আবদুল তখন ব্যস্ত হয়ে পড়ে অন্য কাজে। ঘরের কিনারে গর্ত করে তিনখানা ইট দিয়ে বানানো ব্যাকাপ চুলায় দুধ-পাতি অল্প; তার সাথে বেশি করে চিনি মিশিয়ে চা বানায়। সিঙ্গেল খাটের পায়া ঘেঁষে পড়ে থাকা দুইটা পুরনো কাপে তর্জনীর আঙ্গুল ঘুরিয়ে গতদিনের জমে থাকা চা-পাতিগুলো ফেলে দিয়ে তাতে চা ঢালা হয়। সেই চা ছুরুৎ ছুরুৎ শব্দ করে খায় দুইজনে। কিছুক্ষণ পরে একটা পিকাপ ভ্যান আসলে তারা ভ্যানের সামনের সিটে গিয়ে গাদাগাদি করে বসে। সালাম কোন কথা বলে না, যেন ঘুম কাটেনি তখনও। জানালা দিয়ে বাইরে চেয়ে থাকে চুপচাপ। আবদুল বিড়ি ধরায়। কয়েকটা টান দিয়ে সালামের দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে “হু” শব্দ করে। সালাম ইশারায় না করে দেয়।

পেট বেদনা করে অহনও? আবদুল জানতে চায়।

সালাম বাইরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে “না” বলে। রাস্তায় গাড়ির শব্দে আবদুল কিছু শুনতে পায় না যদিও কিন্তু কোন কথা বলে না আর। 

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের দিকে রাস্তার ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটা তরুণ বটগাছকে কেন্দ্র করে বাস করে শতশত চড়ুই পাখি। ভোর হবার সাথে সাথে তারা জাগতে শুরু করেছে। আবদুলের কাছে প্রতিবার মনে হয় এইটা যেন কোন গ্রামীন বাজারের হইহল্লা। শিয়া মসজিদ মোড়ে একটা ট্রাফিক পুলিশ বক্স আছে। এখানকার দায়িত্বে থাকা পুলিশকে দেখা যায় ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। প্রতিদিন একই দৃশ্য। সেই দিকে সালাম মনযোগ দিয়ে চেয়ে থাকে। আবদুল এটা লক্ষ্য করেছে আগেও। পোলার কি পুলিশ হইবার শখ করছে নি? – সে মনে মনে ভাবে। তখন আফসোস হয় তার। নিজেও পড়ালেখা শিখে নাই, পোলারেও শিখায় নাই। চাইলে তো দিতে পারতো তারে। ইস্কুলটা কাছেই আছিল। এঞ্জিও ম্যাডামেও কয়েকবার কইরা আইছিল। গরীবের পড়ালেখার অত দরকার নাই, এইসব বইলা বইলা পোলারে লাই দিছে। রঞ্জুর পুত ত ঠিকই মেট্টিক পাশ করছে। এখন সালামকে দেখে তার অনুতাপ হয় মাঝেমাঝে।

একটা নীল বিল্ডিঙের সামনে ভ্যান গিয়ে থামলে গেইট খুলে দেয় দারোয়ান। স্লামালাইকুম আবদুল ভাই, আজকা শীত কেমন লাগে? 

কয়েক মাস হলো এইখানে নতুন দারোয়ান এসেছে। এসেই সবার সাথে খাতির জমাতে চাইছে। গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে প্রথম প্রথম সবাই এইভাবে গ্রামের মত খাতির জমাতে চায়। এটা আবদুলের কাছে কোন নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন শহরে থেকে এইসব বুঝতে পারে আবদুল। তাই অত আগ্রহ দেখায় না।

শীত ত ভাই লাগে না – কথা বলতে মন চায় না আবদুলের তবুও উত্তর দিতে হয়।

কি কন ভাই, ঘরে থাইকাও ঠান্ডায় বাচি না আর আপনে বাইরে থাইকা কন শীত লাগে না।

একটা শিশুকে কোলে নিয়ে দারোয়ানের স্ত্রী বের হয় তখন। স্বামীর সাথে শহরে এসে এতসব বিরাট আয়োজন দেখে সেও উচ্ছ্বসিত। তবে তার সকল মনযোগ এখন কোলের শিশুর দিকে। শিশুটাকে ফিডার খাওয়াতে গেলে বারেবারে মাথা ঘুরিয়ে ফেলে। তাই মুখ চেপে ধরে রেখে ফিডার খাওয়ায়।

আল্লার দয়া ভাই, হেয় চামড়া শক্ত কইরা বানাইছে – আবদুলের কথা শুনে ব্যস্ততার মাঝেও দারোয়ানের স্ত্রী ফিরে চায় তার দিকে। অল্প বয়েসে বিয়ে হয়েছে বুঝা যায়। সন্তান পালতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেছে তা চোখেমুখে  ফুটে উঠেছে। 

সালাম বিল্ডিঙের ভিতর থেকে একে একে  ময়লার ঝুড়ি এনে গাড়িতে রাখে । একটা বড় লাঠি দিয়ে আবদুল সেই ময়লাগুলো জড়ো করে। খাবারের গন্ধ পেয়ে কয়েকটা কুকুর গাড়ির পিছনে ঘুরঘুর করছে। এমন সময় বিল্ডিঙের কোন এক তলা থেকে অথবা ছাদ থেকেও হতে পারে, একটা ডাক শোনা যায় 

– এই যে! ময়লা গুলা একটু রাখেন। গাড়িতে তুইলেন না, প্লিজ!

আরও যেসব গুঞ্জন ছিল চারদিকে, এতক্ষণ ধরে যা শোনাই যায়নি, সালামের মনে হলো ডাকটা শোনার পর থেকে সেগুলোও কানে আসতে শুরু করেছে। ফলে এটা তাদেরকে বলেছে নাকি অন্য কাউকে তা বুঝতে না পেরে দুইজনে একসাথে মাথা উঁচু করে উপরের দিকে চায়। পাশাপাশি একসারি বিল্ডিং পাল্লা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যেন শহরে বাস করা জরাগ্রস্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণি ওএমএসের চাল কিনতে লাইন ধরেছে৷ বিল্ডিঙয়ের সামনে প্যাঁচানো তারগুলো দেখে তা আরও বেশি করে মনে হয়। তারই কোন ফাঁকে উপর তলার ছোট এক বারান্দা থেকে একটা নারীমুখ মাথা বের করে ঝুঁকে আছে। একগাছি চুল ঝুলছে তার মুখের সামনে। সেই চুলে ঢাকা পড়েছে আধেকটা মুখ। তাই ভাল করে দেখা যায় না। ডাক শুনে দারোয়ান ছুটে আসে। চিৎকার করে বলে, কি হইলো আপা?

শফিক ভাই, ময়লা গুলা রাখতে বলেন, আমি নিচে নামতেছি।

সালামের কাছে মনে হয় মেয়েটা এইদিকে চেয়ে আছে। কিঞ্চিত হাসির রেখা তার গালের চারপাশে বিস্তৃত হয়। সেই হাসিকে এমন অবস্থাতেই কিছু সময়ের জন্য স্থির করে রেখে মেয়েটা দ্রুত নেমে আসে গাড়ির সামনে, এসে হাঁপাতে থাকে। দারোয়ান এগিয়ে যায় কিন্তু তার দিকে না চেয়ে সে সালামকে জিজ্ঞাসা করে, সব ঝুড়ির ময়লা কি নিয়ে নিছেন?

সালাম কোন কথা বলে না। গাড়ি থেকে আবদুল উত্তর দেয়, আর দুইটা বাকি আছে। কি দরকারে?

আমার একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ময়লার ঝুড়ির ভিতরে পড়ে গেছে। সেটা খুঁজতে হবে। প্লিজ একটু হেল্প করবেন? – মেয়েটা সালামকে বলে। 

শালার বিপদে পড়লে সব মাইয়্যা মানুষরে দেখতে এক রকম লাগে ক্যান! সালামের তখন অন্যকিছু মনে পড়ে। দেখতে একেবারে রুকিয়ার মত লাগে দেখি! শালার রুকিয়া আইলো কইত্থিকা আবার। হেয় ত জামাইর বাইত। খায়দায় আর গাইয়ের মতন পেট ফুলায়। বিয়াডা না কইরা জীবনের ভুল হইয়া গেছে। রুকিয়াকে ভুলতে পারে না সালাম। এক বছর আগে অন্যখানে বিয়ে হয়ে গেছে তবুও তার সাথে যোগাযোগ করে। খুব বেশি মনে পড়লে তার নাম্বারে কল দেয়৷ রুকিয়াই দিয়েছে নাম্বার, সাথে কখন কল দিতে হবে সেইটাও বলে দিয়েছে। বিয়ের পরে এখন রুকিয়াকে আর অধরা মনে হয় না তার কাছে। যেন চাইলেই ছুঁয়া যায়, এইভাবে নিকটে আসে রুকিয়া। তারপর থেকে সে গোফ রাখতে শুরু করেছে৷ মাইয়া মানুষের জীবনে পুরুষ লাগে। সেই পুরুষ হইতে চায় সালাম। 

কি জিনিস আপা? দারোয়ান জিজ্ঞাসা করে। কখন হারাইলো, আমারে বলতেন।

একটা আংটি কাগজের পোটলার ভিতরে রেখেছিলাম। এখন আর খুঁজে পাচ্ছি না। ভুল করে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিছি কিনা মনে নাই।

আরেকটু আগে আমারে বললেই ত সব খুইজা সাফ কইরা রাখতাম। এখন ত ভেজাল হইয়া গেল। আবদুল আর সালামকে কিছু বলতে না দিয়ে আগ্রহের সাথে দারোয়ান একাই কথা বলতে থাকে।

এখন কি করা যায় একটা উপায় বের করে দেন ভাই। জিনিসটা অনেক দামী।

তখনও মেয়েটা সালামকেই বলতে থাকে। দারোয়ান সেখান থেকে সড়ে এসে শিশুটাকে কোলে নিয়ে গেইটের ভিতরে চলে যায়। সালাম কিছু বলে না কিন্তু আবদুলের হাত থেকে লাঠি নিয়ে খুঁজতে শুরু করে। ময়লার বিশাল স্তুপের ভিতরে অনেক্ষণ খোঁজাখুঁজি করেও কিছু পায় না। খোঁজাখুজির কাজ সালাম একাই করে। আবদুলকে ধরতে দেয় না কিছু।

এতক্ষণ ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে থেকে মেয়েটা সালামের দিকে চেয়েছিল। শেষে কিছু না পাওয়া গেলে বিমর্ষ মুখ করে ধন্যবাদ জানিয়ে চলে যায়। মেয়েটা চলে যাবার পরে সালামের চেহারা শক্ত হয়ে উঠে। নিজের অসহায়ত্ব তাকে আবার গ্রাস করে। কিন্তু চুপচাপ থাকার জন্য ঠিক বুঝা যায় না ভাল করে। আবদুল কিছুটা আন্দাজ করতে পারে। ভ্যান চলে যায় আরও ময়লা তোলার জন্য। বাকিটা পথ আবদুল আর কোনকিছু বলে না। পথে সালাম বিড়ি ধরায় কয়েকবার।

পোটলার ভিত্রে আংটি না কি আছিল জানি?

পাইলেও কি, না পাইলেও কি। লাভ আছে কুনু?

সালাম বুঝতে পারে তার মনে কি চলছে তা আন্দাজ করতে পেরেছে আবদুল। তা অসত্য প্রমাণ করার জন্য সে বলে, এর লাইগাই অত ভাল কইরা খুঁজি নাই।

যেন এমন একটা সুযোগই খুঁজছিল আবদুল। তাই তাড়াতাড়ি বলে, চল তাইলে বাপ বেটা মিল্যা আরেকবার খুইজা দেখি। পাইলে ত লালে লাল।

এটা আবদুলের কাছে নতুন না৷ তাই ভাগাড়ের ঠিক সামনে ভ্যান থামিয়ে তারা কাগজের পোটলা খুঁজতে শুরু করে। এবার আবদুলের কথামত, অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে খোঁজ করা হয়। ছোট বড় বিভিন্ন পোটলা খোঁজ করেও যখন মিলছিল না, ঠিক তখনই সালামের চোখে পড়ে জিনিসটা। একটা স্বর্ণের আংটি চকচক করছে ময়লার স্তুপের মাঝে। সকালের রৌদ্র আংটিটার উপরে পড়ে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সালামের কাছে মনে হয় তারা নয়, আংটিটাই তাদেরকে খুঁজে বের করেছে। নিজেকে খোঁজার কথা আবদুলকে দিয়ে বলিয়েছে। কিন্তু আবদুল তখনও খুঁজে যাচ্ছিল। সালাম তাড়াতাড়ি আংটিটা তুলে নেয়, আর আবদুলকে কিছু জানায় না৷ 

আংটি পাওয়ার পর থেকে দুইটা চিন্তা সালামের মাথায় খেলতে শুরু করে। আবদুলকে জানাবে নাকি মেয়েটাকে ফিরিয়ে দিয়ে আসবে। অনেক ভেবেও সে স্থির করতে পারে না কিছু। এদিকে আবদুলের কাছ থেকে আংটি পাওয়ার কথা লুকানোর আত্মগ্লানি তাকে জর্জরিত করে। তাই সে সন্ধ্যার পরে আবদুলের কাছে গিয়ে বসে। 

কইত্থিকা আইলি? বিড়ি টানতে টানতে আবদুল জিজ্ঞাসা করে। 

একটা জিনিস কইতে চাইছিলাম। 

আংটিডা যে পাইছস হেইডা জানাইতি? আমি জানি তো।

অবাক হয়েও সালাম কিছু বুঝতে দেয় না। অভিজ্ঞ আবদুলের ব্যাপারে তার জানা আছে। তাকেও আবদুল খুঁজে পেয়েছিল একদিন সেই কৃতজ্ঞতা তার আজীবনের। 

জিনিসটা ফিরত দিয়া দেই সকালে গিয়া। এর লাইগা তুমার কাছে আইছি।

তর জিনিস তুই দিবি না রাইখা দিবি তুই জানস। আবদুল হাসে।

সালাম দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কি বলবে বুঝতে পারে না। কিছু টাকা যে দরকার তা নিয়েও ভেবেছে সে। আবার মেয়েটাকে দেখার পর থেকে রুকিয়ার কথাও সারাদিন ধরে মনে পড়েছে। রুকিয়াকে নিজের করে পায়নি এই বেদনাবোধ তাকে তাড়া করে চলেছে এতদিন ধরে। সবকিছু মিলে সমাধান পাওয়ার জন্য সে আবদুলের কাছে এসেছিল। কিন্তু আবদুল কোন সমাধান দেয় নি৷ উলটো নিজের সিদ্ধান্ত তার নিজেকেই নিতে বলেছে। সে বের হয়ে যায় ঘর থেকে। 

পরদিন সকালে তেমনি করে ঘুম ভাঙ্গে সালামের। চা খেয়ে দুইজনে গাড়িতে গিয়ে উঠে। নীল বিল্ডিংয়ের সামনে গাড়ি থামে। সালাম ময়লা আনতে ভিতরে যায়। গেট খুলে দারোয়ান বেরিয়ে আসে। একটু পরে তার কিশোরী বধূ বের হয়। বিল্ডিংয়ের কোন এক বারান্দা থেকে মাথা ঝুলিয়ে সেই মেয়েটা ডাক দেয়, ভাই জিনিসটা পাওয়া গেছিল আর? 

সালাম উপরের দিকে চায়, কিছু বলে না। দারোয়ান এসে চিৎকার করে বলে, না আপা, পাওয়া যায় নাই।

মেয়েটা তখন বলে, আচ্ছা। পাইলে বইলেন। তখন বিল্ডিং থেকে একটা গানের লাইন ভেসে আসে, যাক যা গেছে শরতের দিন। 

দারোয়ান চিৎকার করে বলে, কি কন আপা?

কিছু না!

আবদুল জানে সালাম এখনি আংটিটা ফেরত দিয়ে আসবে। কিন্তু সে অবাক হয়ে চেয়ে দেখে সালাম কিছু না বলে চুপচাপ কাজ করে যাচ্ছে। যেন কিছু ঘটেনি আর৷ যেন সে আংটিটা খুঁজে পায়নি। এই প্রথমবারের মত সালামকে সে বুঝতে পারেনি। বিষ্ময় শেষ হবার পরে মানুষ কখনো হেসে উঠে। আবদুলও সেইভাবে হেসে উঠে আর লাঠি দিয়ে ময়লা ঠিকঠাক করতে থাকে।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত