মৃত্যু

একটা দীর্ঘ রাস্তার শেষমাথায় এক ভাঙ্গাচোরা ভূতে পাওয়া ঘর । সেখানে আমরা আস্তানা গাড়লাম ।তাবু…কয়লা…বাতাস… জায়গাটা খোলামেলা ।

আমাদের জিজ্ঞাসা করা হলো , আমরা কে ? আমরা মিটিং ডাকলাম ।
ঢং ঢং ঢং ঘন্টা বাজলে কৌতুকের সাথে আমরা আবিষ্কার করলাম , সব ম্যানিফ্যাস্টোই শেষ পর্যন্ত ডাম্পিং এরিয়ায় হাসাহাসি করে ।
আমরা কথা চালাচালি করে বুঝতে পারলাম, আমাদের সেই অর্থে আসলে কোনো পরিচয় নেই , আমরা স্বপ্নতাড়িত এক উজবুক বোকার কাফেলা ।

আমাদের প্রশ্ন করা হলো, আমরা কেন এসেছি ? আমরা গোল হয়ে বসি ।
আমাদের একজন বৃদ্ধ বিড়বিড় করে, তোমরা কি খেয়াল করেছো ? বুকে বরফ নিয়ে আগুন পোহাতে কিন্ত ভালোই লাগে ।

যাহোক, আমরা জরিপ করে দেখলাম, আমাদের আসলে কোনো মূলগত উদ্দেশ্য নেই । আমরা একটা ম্যাপ ধরে আগাচ্ছিলাম । এখন মনে হচ্ছে, ওটার দাগগুলো খুব যে খাঁটি তা বলা যায় না, ওগুলো এঁকেবেঁকে শুন্যতে চুমু খায় ।

আমরা মনে মনে জানি, আমরা হারাবো । আমাদের যাত্রার পরে একবার অমাবস্যায় বাতাস উঠেছিল ; তাবুর ভেতরে বসে আমরা দেখেছিলাম, আমাদের বাড়ি ফেরার টান আমাদের মৃত্যুর সাথে গলাগলি করে কাঁদে ।

আমাদের জেরা করা হল, আমরা এখন কী করব ?
আমাদের একজন বলল, জোসনার আলো ঘাসে শুয়ে শুয়ে জায়গাটা অলৌকিক দেখাচ্ছে । আপাতত হেঁটে আসা যাক ।
খুক খুক হেসে আমাদের বৃদ্ধ তাকে বলল , এখনো সেন্টিমেন্টাল তুমি, ছোটো ।
আমরা স্যুপ খাই । মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় , আমরা মোটামুটি ভালো সঙ্গী ছিলাম । সবাই একে অন্যের পিঠ চাপরাই ।
আমাদের বৃদ্ধ বলে, যাক বাবা ফুরালো ।

এরপর রাত হামাগুড়ি দেয় । আমরা চুপচাপ গুছিয়ে নিই । মায়া হয় । তারপরও একে অন্যকে আমরা বলি, তাহলে চললাম । তোমাদের কথা মনে থাকবে ।

তারপর আমরা পরস্পর থেকে দূরে দূরে সরে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম । তখন শেষ রাত । আমরা জানি, আমাদের পূর্বসুরিরা শেষ রাতেই বিদায় নিয়েছিলেন । একাকী একা ।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত