ইকারুস

ইকারুস নামের একটা পিঁপড়ার সাথে একবার আমার পরিচয় হয়েছিল। তার জীবন কাহিনী শুনিয়েছিলো, মৃত্যুর শেষ মুহূর্তে। আহা ইকারুস, যে উড়তে চেয়েছিলো, আর এই উড়াই তার কাল হলো!
পিঁপড়াটা প্রেমে পড়েছিলো এক ফড়িং এর। পিঁপড়ার সাথে কি ফড়িং এর প্রেম হয়? হতে পারে? পারে না। তবু ইকারুস মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখতো ফড়িং এর স্বচ্ছ রঙিন পাখা। কী সুন্দর উড়ে চলে। ইকারুস এবার প্রার্থনা করে, তার দেহেও জন্মাক দু জোড়া স্বচ্ছ পাখা। সে উড়ে যাবে ফড়িং এর কাছে। ঐ জলের উপর ভেসে ওঠা লতাগাছগুলোর উপর সেও বসবে, ফড়িংটার পাশে।
ইকারুসের স্বপ্ন একদিন সত্য হয়। সে দেখে, তার দেহেও পাখা গজিয়েছে, কী আশ্চর্য! পাখায় ভর করে সে উড়তেও শুরু করে, আহা কী অসাধারণ সেই অনুভূতি! উড়ে উড়ে সে চলে যায় ফড়িংটার কাছে,,যেমনটা ভেবেছিলো।
যেন তারা এডাম আর ইভ হয়ে গেলো মুহূর্তে। হায় প্রেম! ইকারুস জানতো না, পুরুষ পিপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তবে! যদিও রাণী পিঁপড়ারা প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার ডিম ও রাজ্য রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য আরো অনেকদিন বেঁচে থাকে, পাখা সমেতই। কারণ সে নারী আর এ পৃথিবীতে নারীর অনেক কাজ,,অনেক দায়িত্ব। শুধু আকাশে উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য রাণী পিঁপড়ার জন্ম হয় নি।
ফড়িং ভেবে যার পাশে ইকারুস বসেছিলো,,সে আসলে ছিলো এক রাণী পিঁপড়া।
“প্রেমিক মিলবে প্রেমিকার সাথে ঠিকই
শান্তি পাবে না, শান্তি পাবে, শান্তি পাবে না।”
আমাদের ইকারুসও শান্তি পায় না। সঙ্গমের পর তার ডানা খসে পড়ে যায়। বুক ধড়ফড়ানি রোগে সে মারা যায়।  রাণী পিঁপড়া তার ছোট্ট ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে যায়, মৃত্যুর আগ মুহূর্তে ইকারুসের চোখে ভাসে শেষ দৃশ্য। একটা রঙিন ফড়িং উড়ে যাচ্ছে।
ইকারুসের জন্য কষ্ট হলেও রাণী পিঁপড়া তার দায়িত্ব পালনে সামনে এগিয়ে যায়। তার অনেক কাজ, পুরো রাজ্যের দায়িত্ব তার কাঁধে। কোথাকার কোন এক ইকারুসের কথা ভাবলে তার চলবে না।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত