রাক্ষুসে

<span;>প্রতিদিনের মত নেছার মোল্লা তার অটোভ্যান নিয়ে লঞ্চ ঘাট যাচ্ছে। লঞ্চে আগত ঢাকাই যাত্রীদের ঘাট থেকে যার যার বাড়িতে পৌঁছে দিতে ঘাটে রিকশা-ভ্যান ওয়ালাদের বড় ধরণের ভীর লক্ষ করা যায়। সবার মধ্যে একপ্রকার প্রতিযোগিতা চলে। কে বেশি দূরের যাত্রী বহন করবে এটা নিয়েও কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। কেননা, দূরের যাত্রী বহনে অধিক ভাড়া আদায়ের প্রত্যাশা থাকে। শেষ রাতের গভীর ঘুম ছেড়ে কে আগে এসে ঘাটে পৌছুতে পারে এটা নিয়েও চলে প্রতিযোগিতা। শরীরে অনেক উত্তেজনা নিয়ে নেছার গ্রামের পিচঢালা রাস্তা দিয়ে ভ্যান চালিয়ে আগাতে থাকে ঘাটের দিকে। কিভাবে সকলের আগে গিয়ে ঘাটে পৌছুতে হবে এই মূহুর্তে এটাই তার বড় চিন্তা।

<span;>হঠাৎ ‘পাগলার পুল’ নামক পুলের উপর নেছারের ভ্যান গাড়ি থেমে যায়। নেছার থামাতে বাধ্য হয়। চারজন লোক নেছার সহ তার ভ্যানকে ঘিরে দাড়িয়ে পড়ে। আসলে তারাই নেছারের পথ আটকিয়েছে। এদের মধ্যে দুজনকে নেছার ভালোভবে চিনে, নিজ এলাকার পরিচিত লোক। বাকি দুজনকে ঠিক ঠাওরে উঠতে পারছিল না। চারজনের মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করে ওঠে ‘কোমনে যাও খানকির পোলা?’ নেছার থতমত খেয়ে তোতলানোভাবে জবাব দেয় ‘লঞ্চ ঘাডা’ চারজন একে-অপরের মুখের দিকে চাওয়াচাওয়ি করে। কিছুক্ষণ পর ফের একজন প্রশ্ন করে ‘লগে কয় ট্যাহা আছে খানকির পোলা? সব বাইর কর।’ নেছার পলক না ফেলে জামার পকেট হাতাতে থাকে। জামার বাম পাশের বুক পকেট থেকে একটি টিস্যু পেপারের খোসা বের করে চারজনের দিকে এগিয়ে দেয়। একজন খোসাটি হাতরে খুচরো কয়েকটা কাগুজে নোট বের করে। অপরজন বলে ‘কত?’ জবাব আসে ‘অ্যাকশো ট্যাহা।’ চারজনের মধ্যে এতক্ষন ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি রাগে হিরহির করতে করতে প্রচন্ড শব্দ করে নেছারের গালে চড় বসিয়ে দেয়। চড়ের ধাক্কা সামলাতে না পেরে নেছার ভ্যান থেকে রাস্তায় পরে যায়। তখন চারজন মিলে নেছারের শরীরের উপর দেদারসে কিল, ঘুষি, লাথি দিতে থাকে।

<span;>এই রাস্তা দিয়ে আরো কয়েকটা ভ্যান গাড়ি ঢাকাই যাত্রী বহনের জন্য ঘাটের দিকে যায়। কেউ কেউ একমুহূর্তের জন্য হলেও পাগলার পুলে তাদের ভ্যান গাড়ি থামিয়ে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে চায়। কিন্তু পরক্ষণেই দ্রুত গতিতে সরে যায়।

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত