নভেম্বর চারঃ ১

(এক)

বাংলাদেশের হেমন্তের একটা আলাদা চেহারা আছে, বিশেষ একটা রূপ আছে। আমার মত যারা জেলা শহরগুলিতে বড় হয়েছে, তাদের হেমন্তের এই বিশেষ চেহারাটা চিনতে পারার কথা। অবশ্য বাংলাদেশের জেলা শহর বা মফস্বলগুলিতে বেড়ে উঠলে প্রতিটা ঋতুই, এবং ছয়টা ঋতুর আলাদা আলাদা চেহারা, সেগুলির আস্তে আস্তে বদলে যাওয়া, ধীরে ধীরে বাতাসের গন্ধ বদলে যাওয়া, দিনের বিভিন্ন সময়ে আলোর রঙ বদলে যাওয়া, সন্ধ্যার নিঃশ্বাস বদলে যাওয়া – এইসব অস্তিত্বের অংশ হয়ে যায়। এসবের মধ্যে থাকা অবস্থায় তা আলাদাভাবে হয়ত টের পাওয়া যায়না, কিন্তু বিচ্ছিন্ন হলে অথবা দূরে গেলেই সময়ের সাথে এই পরিবর্তনগুলি শরীর ও মন অবচেতনভাবে খুঁজতে থাকে, আশেপাশের পরিবেশের সাথে নিজের সম্পর্কটা সম্পূর্ণ কাজ করেনা; একটা খাপছাড়া ভাব, কোথাও কিছু একটা মিসিং। বাংলাদেশের হেমন্তের এই ব্যাপারটা আমি প্রথম উপলব্ধি করলাম প্রথমবার যখন ইউরোপে গেলাম, প্রায় ১০ বছর আগে। প্রায় না, এক্স্যাক্টলি ১০ বছর আগে। উইন্টারের আগে যে ফল সিজন শুরু হয় সেখানে, সেটা কী বলব! আমাদের এখানকার বর্ষা, শরত আর শীতের একটা ফিউশনের মত, তাও শতভাগ ফিউশন না, বলা যায় সেই ফিউশনের ৭০ শতাংশ। বর্ষার মত মেঘলা আকাশ, গ্লুমি আবহাওয়া একটানা দিনের পর দিন, কোথাও কোনো রঙ নাই- মনে হয় অতীতের কোন এক সাদাকালো সময়ে ঢুকে পড়েছি, আমাদের এখানে আশ্বিন মাসে বৃষ্টি হলে বাতাসে যেরকম আর্দ্রতা থাকে সেরকম আর্দ্র বাতাস, আর আমাদের শীতের শুরুতে যেরকম ঠান্ডা থাকে সেরকম ঠান্ডা- এইসবকিছুর একটা মিশ্রণ। তখন আমি এখানকার হেমন্তের চেহারা, ফ্লেভারটা উপলব্ধি করতে পারি। হেমন্তের দুপুরের আগের মিষ্টি রোদ, দুপুরের অল্প সময় সামান্য হাল্কা কড়া রোদ, বিকালের আগে আগে আবার সেই দুপুরের আগের মত মিষ্টি রোদ- একটা কানাবকের মত ডেসপারেট হয়ে আমি তখন খুঁজতাম, স্মৃতি থেকে অনুভব করার চেষ্টা করতাম।

তবে এই জিনিসটা আমি তার আগে আরো একবার টের পাই। প্রথমবার যখন রংপুর থেকে এসে ঢাকায় থাকতে শুরু করি, ইন্টারমিডিয়েটের পরে। তখন আমার অভিজ্ঞতা হয়, এবং ব্যাপারটা আমি আরো অনেক পরে উপলব্ধি করতে পারি, বিদেশে চলে আসার পরে, যে উত্তরবঙ্গের যেকোনো শহরের হেমন্ত বাংলাদেশের অন্যান্য যেকোনো জায়গার চেয়ে আলাদা। আমাদের রংপুরে কার্তিক ও অগ্রহায়ন- এই দুই মাসে রোদের রঙের মধ্যে সোনালী রঙের একটা শেড চলে আসত। সকালের পরে আর বিকালের আগে আগে রাস্তার পাশের কোনো পুকুরের মধ্যে, কোনো রেইন্ট্রি বা শিশু গাছের মাথায়, বারান্দায় টবের গোলাপ গাছে, ক্যাকটাসে, বাড়ির উঠানের পেয়ারা গাছের মাথায়, পুকুরের পাশে নারিকেল গাছের গুড়িতে, ব্রীজের রেলিং-এ- রোদ পড়লে সোনালী রঙের সেই শেডটা চোখে টের পাওয়া যেত। আর বিকালের পরে পরে, সন্ধ্যা যখন ঠিক নামত, পাতলা ফিনফিনে হাল্কা সাদা রঙের কুয়াশা পড়ত। দূরে তাকালে মনে হত খুব স্বচ্ছ সাদা একটা পর্দা ঝুলে আছে শুন্যের উপর। আর মাঝে মাঝে কোনো কোনো সন্ধ্যায় রাস্তার উপরে ও সাইডে পড়ে থাকা পাতা ঝাড় দিয়ে জড়ো করে কোনো এক কোণায় আগুন ধরিয়ে দিত কেউ, মাঝপথে আগুন নিভে যেত, আর সেইসব কোণা থেকে ধোঁয়া উপর দিকে উঠে উঠে ছড়িয়ে পড়ত। সেই দৃশ্য আরো বিধ্বংসী, আরো ভয়াবহ সুন্দর। রিকশায় যেতে যেতে দেখা যেত কুয়াশার সাথে ধোঁয়া মিশে সেই কুয়াশার হাল্কা সাদা রঙ আরো একটু গাড়ো হয়েছে, আর বাতাসে ধোঁয়ার গন্ধ। সেই সময় চারদিকে শহরের মসজিদগুলিতে মাগরিবের আজান পড়ত।

আর প্রতিদিন সকালে, সাড়ে আটটা নয়টার দিকে দেখা যেত চারদিক ঝকঝকে, আকাশ অনেক উপরে, পরিষ্কার। বারান্দার টবে গোলাপ গাছের পাতায়, গোলাপের পাপড়িতে শিশির পড়ত প্রতিদিন। একটু শীত শীত করত। তবে প্রতিদিনই খুব সামান্য করে শীত বাড়ত, খুবই সামান্য। প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে শীত বাড়ত, প্রকৃতির সেই মাপটা এতই সূক্ষ্ম যে সেটা ভাল করে খেয়াল না করলে হঠাত করে খেয়াল করার কোনো উপায় নাই। এবং যারা বছরের পর বছর এই চক্রের মধ্য দিয়ে গেছে, শুধুই তারাই হয়ত সামান্য খেয়াল করলেই সেটা, প্রতিদিন তার আগের দিনের চেয়ে সামান্য শীতের বৃদ্ধিটা বুঝতে পারবে। হঠাত করে সেখানে গিয়ে পড়লে জিনিসটা ধরা সম্ভব না।

তাই প্রতিবার এই সময়টাতে, নভেম্বর মাস শুরু হলেই আমার পাঁচটা ইন্দ্রিয়ই অনেক বেশি তীক্ষ্ণ হয়ে উঠে। আমি পৃথিবীর যেখানেই থাকি না কেন, আমার অবচেতন মন ডেসপারেট হয়ে কিছু একটা খুঁজতে থাকে; আমি টের পাই। ভিতরে ভিতরে আমার অ্যারোগেন্স বেড়ে যায়, মানুষের সাথে মেলামেশা-কতাবার্তা আরো কমে যায়, আমি আরো রিজার্ভ হয়ে উঠি। পনের-ষোল বছর আগের সেই স্মৃতি, সেই ঘটনা আমাকে কখনোই তাড়া করেনা, আমার আবেগকেও স্পর্শ করেনা; তবে আমার স্মৃতিতে সেই ঘটনার উপস্থিতি আর সেই ঘটনার অস্তিত্ব ভালোভাবে টের পাই। তখন আমার সময়ের নিজস্ব টানেলে আমি পিছন ফিরলে দেখতে পাই, সেই ঘটনাটা যে অংশটুকু দখল করে আছে সেখানে কেউ একজন, তবে সেটা আমি না নিশ্চিত, একটা আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে। সম্ভবত সময় নিজেই। আর আমি তখন সেই অংশটুকুর সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পাই। প্রকৃতির সবচেয়ে ক্ষমাহীন, নৃশংশ ও অনিয়ন্ত্রিত শক্তি হল সময়।

১৬ বছর আগে, রোজার মাস ও ঈদ পড়েছিল এরকমই এক হেমন্তে।২০০৪ সালে, অগ্রহায়ন মাসের শেষের দিকে, রোজার ঈদের দিন, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ। ঈদের দিন খুব সকালে, আমি আমাদের রংপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়ার বাসায়, নীচতলায়, পূর্ব পাশের ঘরে আমার বিছানায় ঘুমিয়ে আছি, বলা ভাল ঘুম ও জাগরণের মাঝামাঝি অবস্থায় শুয়ে আছি চাপা উৎকণ্ঠা নিয়ে। আমার ঘরের দরজা তখন সামান্য খোলা, বাইরে থেকে উঁকি দিলে ভিতরে দেখা যাওয়ার কথা যে আমি একটা কাথা টেনে, বালিশে মাথা কাত করে উলটা হয়ে শুয়ে আছি। শেষ অগ্রহায়নের ঠান্ডায় আমার ঘুম গাড়ো হওয়ার একটা সম্ভাবনার মধ্যে আছে, আমার খুব আরাম লাগছিল। আমি এটাও বুঝতে পারছিলাম, আমার এই অবস্থার যদি এক সুতা পরিমাণ পরিবর্তন হয়, আমি যদি সামান্য নড়ে উঠি বা একবারের জন্য মাথা তুলি, তাহলে আমার এই আরাম উপভোগ করাটা তখনকার মত নষ্ট হয়ে যাবে। যদিও আমার তখন গভীর ঘুমে থাকার কথা, কিন্তু আরো কিছুক্ষণ আগেই আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল টিউবওয়েল চাপার শব্দে। আমার বিছানার পাশের জানালাটার অন্যপাশে, কাঁধ পর্যন্ত উঁচু দেয়াল ঘেরা আমাদের ফাঁকা জায়গাটার মাঝখানে একটা টিউবওয়েল আছে। শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরে আমার প্রথমেই মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মনে হয়েছিল এই শেষরাত্রে, অথবা এত ভোরে গেট খুলে ওখানে গিয়ে কার টিউবওয়েল চাপার প্রয়োজন পড়ল। সাথে সাথেই আবার মনে পড়েছে আজ যেহেতু ঈদের দিন, সম্ভবত আম্বিয়া আগের রাতে আম্মার দেওয়া নির্দেশ অনুসারেই এত ভোরে বাড়ির আশেপাশে ঝাড় দেওয়া শেষ করে টিউবওয়েলে গেছে। ঘুম ছুটে যাওয়ার পর থেকেই ভোরের এই ঠান্ডা আবেশের মধ্যেই তন্দ্রা উপভোগ করছিলাম, আর মনে মনে অপেক্ষা করছিলাম কখন আব্বা আমার দরজার সামনে এসে জরুরী ভঙ্গিতে বলবেন, অ্যাই ওঠ, ওঠ, ফজরের নামাজ না পড়লে ঈদের নামাজ হবেনা।

এই একই কথা আরেকবার রিপিট করে তিনি চলে যাবেন।

এরপর ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার আগ পর্যন্ত আমাকে আর তার মুখোমুখি হতে হবেনা, সুতরাং আব্বাকে ফাঁকি দিতে পারলেও এর পরের আরো একটা ব্যাপার, যেটার কোনো বিকল্প অথবা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নাই, সেটা নিয়ে আমি একটু উতকণ্ঠা ও অস্বস্তিতে ছিলাম। ঈদের দিন হওয়ায় ওইদিন সকালেই গোসল করতে হবে এবং এই ঠান্ডার মধ্যে ঠান্ডা পানি দিয়ে। এই মৃদু উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি ছাড়া অগ্রহায়নের সেই সকালে, শীত অনুভব করতে করতে আমার তন্দ্রা ছিল নিরাপদ। আমি তখন জানিও না কয়টা বাজে, যেহেতু আব্বা এসে এখনো তাড়া দেন নাই, আমি ভেবেছিলাম আরো সময় আছে। এখনই আমাকে উঠতে হবেনা। এরই মধ্যে দূরে, বাসার একেবারে মেইন গেট থেকে মানুষের কথা ও হৈচৈয়ের আওয়াজ পাই। আমি ভেবেছিলাম গ্রামের বাড়ি থেকে কোনো আত্মীয় অথবা পরিচিত কেউ এসেছে, অথবা কাউকে দিয়ে সামনের গাছগুলি থেকে ডাব বা নারকেল পাড়ানো হচ্ছে- সেখানে কোনো ঝামেলা। আমি সেইদিকে কোনোরকম মনোযোগ বা পাত্তা না দিয়ে একই ভঙ্গিতে শুয়ে ছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই আমার রুমের পাশের রুমে কারো অস্থির পায়ের শব্দ শোনা যায়, এবং সেই শব্দ শেষ হতে না হতেই আমার মেজো খালার গলার আওয়াজ পাওয়া যায় আমার দরজার বাইরেই- তার গলায় এমার্জেন্সী স্বর- তিনি বলছিলেন, রেহান, বাবা ওঠ… আল্লাহ তুমি কী করলা… আমার কলিজার টুকরারেই তোমার চোখে পড়ল!

আধা ঘুম আধা জাগরণের মধ্যে আমার মাথায় চিন্তা ও যুক্তি ঠিকঠাক কাজ করছিলনা যে এত সকালে, নিজের বাড়ি ছেড়ে মেজো খালা আমাদের বাড়িতে কী করছেন! আর কখন আসলেন! আর উনি কী বলছেন আসলে!

আমি শুয়েই ছিলাম। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তিনি আমার রুমে ঢুকে পড়েছেন, আমার বিছানার পাশ থেকে আরো জরুরী স্বরে, কান্নায় ভেঙে যাচ্ছে তার গলা তিনি বলছিলেন, বাবা রেহান আর মরার ঘুম ঘুমাইস না, আমারে ধর বাবা- বলে তিনি হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন।

সেই মুহূর্তে, এক সেকেন্ডেরও দশ ভাগ সময়ের এক ভাগের মধ্যে আমার তন্দ্রা, ঘুম, শীত শীত ভাব কই চলে গেল আমি জানিনা। আমি লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম।

মেজো খালা হাত দুটি তার দুই হাত দিয়ে শক্ত করে ধরলেন, তখনো তিনি হাউমাউ করে কাঁদছেন, বললেন, শাফায়েত আর নাই। শাফায়েত আর নাই। শাফায়েতরে মাইরা ফেলছে। আল্লায় নিয়া গেছে অরে।

মেজো খালার কথা আমার কানে ঢোকার সাথে সাথে দুই ধাক্কায় আমার প্রেশার নেমে গেল যে আমি বিছানার উপর কাত হয়ে পড়ে গেলাম।

মেজো খালা তখনো বিলাপ করছেন, অরে ছুরি মারছে। ঘাড়ে কোপ দিছে।

আমি এক মিনিটের মধ্যে কিছুটা ধাতস্থ হয়ে এক দৌড়ে বাইরের রুমে চলে গিয়েছিলাম। বারান্দায় বের হয়ে দেখি, আমার বড় ভাই, আমার এক মাত্র ভাই শাফায়েতকে- শাফায়েতের লাশ বারান্দায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। পুরাতন একটা বিছানার চাদর দিয়ে ঢাকা। মানুষ ঘিরে আছে।

বয়সে আমার চেয়ে ৯ বছরের বড় আমার ভাই শাফায়েত সেইবার রোজার প্রথম দিন থেকেই এত্তেকাফে বসেছিল। পুরো রোজার মাস এত্তেকাফে কাটিয়ে আগের রাতে যখন তার ফিরে আসার কথা তখন মসজিদে দেখা হলে আব্বাকে জানিয়ে দিয়েছিল সে ফজরের নামাজ পড়ে ঈদের দিন সকালে বাসায় ফিরবে। স্বাভাবিকভাবেই আব্বা তার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে এবং তার সাথে দ্বিতীয় কোনো কথা না বলে চলে এসেছিল।

সম্ভবত ফজরের নামাজ শেষ করে, ভোরে অন্ধকার থাকা অবস্থায়ই, আমাদের পাড়ার মসজিদ থেকে বাসার দূরত্ব অতিক্রম করার সময় কোনো একটা গ্রুপ তাকে খুন করে।

২০০৪ সালের হেমন্তের অগ্রহায়নের শেষের দিকে, নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ, রোজার ঈদের দিন আমার ভাই শাফায়েত মারা যায়। তাকে মেরে ফেলে।

শাফায়েত মারা যাওয়ার পরে, ঠিক ওই মুহূর্তে, শাফায়েতের লাশ যখন আমার সামনে, আমি টের পাই আমার ভিতরের একটা অংশ কোনো একভাবে এই ঘটনাকে অনিবার্য হিসাবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এবং তখন আমার ১৮ বছর বয়সের জীবনে আমি প্রথমবারের মত তীব্রভাবে অনুভব করি একটা ঘটনা, একটা বাস্তবতা কতটা অবিশ্বাস্য হতে পারে। অনিবার্যতা ও অবিশ্বাস্যতার মাঝখানে পড়ে আমি বুঝতে পারি আমি আর বারান্দার ফ্লোরের উপর দাঁড়িয়ে নেই, আমি পড়ে যাচ্ছি, আমি শূন্যের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি, আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। আমার ভিতরের একটা অংশ বুঝতে পারেনা যে এই ঘটনা জীবনের আর চার-পাচটা বড় সমস্যার মত না, এর কোনো সমাধান নাই; সে পাগলের মত এই ঘটনাকে অস্বীকার করার, সেখান থেকে বের হওয়ার ও সবকিছু স্বাভাবিক করার রাস্তা খুঁজতে থাকে। আমার আরেকটা অংশ ততক্ষণে উপলব্ধি করতে শুরু করেছে যে আমার ভাই এখন জীবন ও এই নশ্বর পৃথিবীর আওতার বাইরে; জীবন ও জীবনের যে কোনো ঘটনার সাথে সমঝোতা করা যায়, কিন্তু শাফায়েত এখন জীবনের সীমা পার হয়ে চলে গেছে। আমার সেই অংশটার শক্তি এত বেশি ছিল যে আমি প্রচণ্ড অসহায় বোধ করি, এই অসহায়ত্বের সাথে এর আগে আমার পরিচয় ছিলনা।

ছবি (ফ্রম ইন্টারনেট)- মঙ্ক বাই দ্য সী, ক্যাসপার ডেভিড ফ্রেডরিখ

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত