বনলতা (২)

একেকটা দিন আসে যেন না ফুরাবার বাসনায়। সময় গুলো ঝিম ধরে থাকে। ঘড়ির কাঁটা গুলোও কী ঘুমিয়ে যায়! ভোরের পর সকাল গড়িয়ে দুপুরে নামে না। টিপটিপ করে চলতে চলতে একসময় হয়তো নিজেই ভুলে যায় দিন এখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল এবং সন্ধ্যা টানা প্রয়োজন।

বনলতার সময় কাটেনা, কোনো অপেক্ষা নেই, কাজ নেই, কথা নেই সব কিছু থেকে গুটিয়ে নিয়ে সে কোন গুহার অন্দরে নিয়ে চলেছে নিজেকে তা নিজের কাছেও পরিষ্কার না।

এক রাজ্যের অভিমান সমাজ সংসারে থেকে তাকে ভিন্ন করে দিচ্ছে। নিঃসন্তান বনলতার অভিমান মাঝে মাঝে সমস্ত সীমা অতিক্রম করে তারপর থেমে ভাবে – আর কী হবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় পীড়াদায়ক কৌতুহলী দৃষ্টি, প্রশ্ন আর পরামর্শ এড়াতে সামাজিক অনুষ্ঠানাদি বাদ দিয়ে চলে।

সন্ধ্যা নাগাদ রফিক চতুর্থ বারের মতো ফোন করে। আলমারিতে তার ড্রয়ারে নির্দিষ্ট ফাইলে সাত নং পৃষ্ঠায় স্বাক্ষরের এর নিচের তারিখটা ঠিক কতো আছে। একটা ফাইল ভুল করে না নেয়াতে এ পর্যন্ত চার বার ফোন করতে হয়েছে তাকে। কেবল কাজের কথা। কিছু মানুষ থাকে কথা বলাকেও অপচয় ভাবে হয়তো। একবার এক ফাঁকে অবশ্য জিজ্ঞেস করেছে – ঠিক মতো অষুধ খেয়েছ? তবে উত্তরের অপেক্ষা করেনি। বনলতার বিষয়ে আর কিছু বলার প্রয়োজন বোধ করেনি সে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ঘরের সমস্ত সদস্যদের ঠিকঠাক খেয়াল রাখতে পারলে নিজেরটা কেন পারে না – রফিক এর যুক্তি খুঁজে পায়না। কেন বার বার মনে করিয়ে দিতে হবে অষুধ খাও, অষুধ খাও।

রফিকের প্রাইভেট কোম্পানির চাকরি। টাকা বেশি দেবার সাথে সাথে দায়িত্বও প্রদান করে এবং সুষ্ঠু ভাবে তা পালন করতে হয়৷ সাংসারিক দায় দায়িত্ব পালন এর পর নিজস্ব বন্ধুবান্ধব, সোশাল মিডিয়া, ইন্টারনেট রফিকের সবটুকু সময় জব্দ করে নেয়। রফিক নিজেই বনলতাকে ফেসবুক আইডি খুলে দিয়েছিলো। এর পেছনে গোপন ভাবনা ছিলো বনলতার পাসওয়ার্ড সে নিজের হাতে রাখবে।

সবই বোঝে বনলতা। ফেসবুকে তার আগ্রহ হয়না। সবাই কেমন হাসি হাসি মুখ করে ঘুরে বেড়ানো ছবি দেয়। যেনো পৃথিবীতে তাদের চেয়ে সুখি কেউ না। আসলেই এতো সুখি সবাই? তা হয়?

অন্যকে সুখি দেখতে মানুষের গোপন অনিচ্ছা কাজ করে। বনলতার অনাগ্রহের কারণ ফেসবুককে অনেক বেশি মেকি মনে হয়। মেকি যেকোনো বিষয়ে তার প্রবল আপত্তি।

অনেক লোকের মধ্যে যখন রফিক তার কাঁধে হাত জড়িয়ে থাকে অস্বস্তি হয়। কারণ ঘরে ফিরে রফিক সম্পূর্ণ অন্যরূপ ধারণ করে। এর তুলনা হতে পারে কেবল গাছের গুড়ির সাথে। রফিক অভিযোগ করে কেন সে ছবি পোস্ট করে না। অন্যরা কতো কতো ছবি দেয়। বনলতা উত্তরে বলে বাদ দাও, তুমি দিয়েছ তাতেই হবে।

দু’বছর ধরে ডাক্তার দেখাচ্ছে, ওষুধ খাচ্ছে বনলতা এবং রফিক দুজনেই। তাদের একটি সন্তান প্রয়োজন। দাম্পত্য জীবনের বন্ধন সন্তান। সন্তান অর্থাৎ শিশু, নিজের একটা শিশু। কোলেপিঠে করে মানুষ করতে হবে তাকে। বড় হয়ে মাতাপিতার দেখভাল দায়িত্ব সে পালন করবে এই আশায়ই কি কেবল সন্তানের জন্ম দেয় মানুষ? সব সন্তান কী দায়িত্ব পালন করে? বা চাইলেই পারে?

বনলতা একটি শিশু দত্তক নিতে চেয়েছিলো। রফিকের অমত। রফিক বলে, পরের রক্ত আর নিজের রক্তের ভেতর অনেক পার্থক্য, সময়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়।

মত-অমত মানুষকে আরো দূরবর্তী করে দেয়। কাছে টানার জন্য কি আছে জীবনে – বনলতা আগে ভাবতো। এখন আর সেভাবে কিছু ভাবতেই পারে না।

৫.

আগামীকাল বনলতার জন্মদিন। সন্ধ্যা পর্যন্ত রফিক চারবার ফোন করেছে। জন্মদিন বিষয়ে কিছু বলেনি। জানে মিথ্যে আশা তবুও বনলতা ভাবে হয়তো রাত বারোটায় উইশ করবে রফিক। এমন কিছু ঘটেনি অবশ্য গত পাঁচ বছরে।

ভাদ্রমাসে যখন তখন ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়। সাথে বজ্রপাত। বাতাস থাকেনা তেমন। আজ বেশ বাতাস বইছে। জানালা থেকে বৃষ্টির ছাট আসছে। জানালায় গিয়ে দাঁড়ায়। বজ্রপাতকে খুব ভয় তার। কি হবে যদি জানালা বরাবর একটা বজ্র এসে তাকে ছুঁয়ে যায়। তাই বরং হোক। কোনো দোষ হবে না কারো। কাগজে খবর বের হবে নিজ ঘরে বজ্রাহত হয়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু।

আহ মৃত্যু, এতো কাছে কাছে ঘুরে বেড়াও অথচ আমাকে চেনো না – আনমনে বলে ওঠে বনলতা। আর তখনই বিপুল শব্দে ববজ্রপাত হয় কাছে কোথাও। জানালার থাই এ্যালুমিনিয়াম টেনে দেয় তাড়াতাড়ি।

জীবনের জন্য মায়া কেউ এড়াতে পারেনা। তবে কিছু মানুষ পারে।অবলীলায় তারা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে। সত্যি কী এতো সহজ?

ভার্জিনিয়া উলফ! এনি সেক্সটন! সিলভিয়া প্লাথ! হেমিংওয়ে! জীবনানন্দ দাশ!

হঠাৎ বিকট শব্দে ট্রান্সমিটার বার্স্ট করার শব্দে বনলতার চিন্তার ঘোর বাঁধা পেলো। সমস্ত দিক অন্ধকার হয়ে গেলো। বাড়ির আইপিএসটা নষ্ট হয়ে গেছে। বনলতা উঠে গিয়ে চার্জার লাইট অন করে আলো ডিম করে রাখে।

একটা ভৌতিক পরিবেশ তৈরী হয়েছে চারদিকে। আধো আলো আধো অন্ধকার! এ যেন জীবনানন্দের, আলো অন্ধকারে যাই — এর মতো অবস্থা! আবার জীবনানন্দ দাশ! রফিক বারবার বিরক্ত হয়ে ওঠে কবির প্রতি। এমন কেন করে বনলতা জানে না। হয়তো রফিকের বিরক্তিতে আরো বেশি নিজের লাগে এই কবিকে। প্রিয় কবি এখনও বলতে পারে না বনলতা। তবে প্রিয় আত্মা মনে করে।

জীবনানন্দ দাশ কেন আত্মহত্যা করলেন? নাকি তাঁর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিলো সত্য। এই মানুষটাই বনলতাকে শিখিয়েছেন – জীবনকে অগ্রাহ্য করা কোনো কঠিন কাজ নয়। সহজভাবে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা একটি আর্ট।

এই আর্টটি রপ্ত করতে চেয়ে মানুষ জীবনান্দ দাশকে নিয়ে সে প্রায় ভাবনায় পড়ে।

আত্মহত্যা বিষয়ক খবর গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ে আর ভাবে সুযোগ পেলেই। গুগল তো আছেই। এমন ঘোরে চলে একেক দিন। ওই সময় যদি কেউ দেখে বনলতাকে চিনতে পারবে না। দিকভ্রান্ত দৃষ্টি। পাংশু মুখ।

উদাসী মানুষকে পছন্দ করেনা কেউ। বনলতার অভিজ্ঞতা তা-ই বলে। অথচ সাহসি না হলে উদাসী হওয়া যায়না। নিজের মনের এলোমেলো চিন্তা অনেকটা গুছিয়ে এনেছে বনলতা। জীবনান্দের মতো অলক্ষ্যে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে সে। বুঝবে না লোকে। দোষ দেবারও সুযোগ পাবেনা। সুযোগ পেলে, দারিদ্র্য না থাকলে, লাবণ্য দাশের সাথে প্রেম থাকলেও কী তিনি কখনও পালাতে চাইতেন?

ভার্জিনিয়া উলফ তো সব পেয়েও চলে গিয়েছিলেন। কিসের টানে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে পেরেছিলেন!

কয়েকদিন ধরে জীবনানন্দ দাশের উপর গবেষণামূলক একটি বইয়ের রিভিউ দেখছে সে ফেসবুকে। রিভিউ গুলো পড়ে বনলতার মনে হয়েছে বইটা সংগ্রহ করা প্রয়োজন। জীবনের শেষ সময়কে কাছে থেকে আরো কাছে এনে দিতে পারবে বইটি।

“অবাক হয়ে ভাবি, আজ রাতে কোথায় তুমি?
রূপ কেন নির্জন দেবদারু দ্বীপের নক্ষত্রের ছায়া চেনে না-
পৃথিবীর সেই মানুষীর রূপ?
স্থূল হাতে ব্যবহৃত হয়ে – ব্যবহৃত – ব্যবহৃত- ব্যবহৃত – ব্যবহৃত হয়ে – ব্যবহৃত – ব্যবহৃত –
আগুন বাতাস জল : আদিম দেবতারা হো হো করে হেসে উঠলো :
‘ব্যবহৃত – ব্যবহৃত হয়ে শুয়োরের মাংস হয়ে যায়?’

মৃদু স্বরে একা ঘরে আবৃত্তি করে বনলতা। এইখানে এসে নিজের ভেতরের চাপা কান্না উচ্ছ্বসিত হয়ে উপচে বেরিয়ে পড়ে। ফেটে পড়তে চায় ফুসফুস। নিশ্বাস নেবার জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস মেলেনা। প্রথমে নিজের জামার একাংশ খামচে ধরে বিছানায় বসে যায়। একটা কুশন টেনে তার ভেতর মুখ লুকায় সে। কান্নার শব্দ বাইরে যেন বাইরে না যায়। কতো কতো রাত এমন কান্নায় ভরা তা জানে বিছানার কুশন বালিশ।

নিঃশব্দ কান্নার অভ্যাস তার ছোটোএলা থেকে। কারণে অকারণে যখন তখন কান্না লুকানোর ক্ষমতাও তৈরি হয়ে গেছে। হয়তো মা বকেছিলো দুপুরে। রাতে বাবা এসে ঘুমন্ত বনলতার মাথায় হাত বোলালে ওপাশ ফেরা বনলতার চোখ ফেঁটে অশ্রু ঝরতো। কলেজে ম্যাডামের কাছে বকা খেয়ে কিংবা বন্ধুর সাথে কথা কাটাকাটি হলো বাড়ি ফিরে বেসিনের কল খুলে আয়নায় অবয়বের সাথে কথোপথনের সাথে সাথে ঝরতে থাকতো নিশ্চুপ অশ্রু। বিয়ের দিনও কান্নার শব্দ কেউ শুনতে পায়নি। বাবার পায়ে হাত দিয়ে উবু হয়ে বসা বনলতার কান্না কেউ দেখতে পায়নি।

নিজেকে সামলে নিয়ে চোখ মুছে বনলতা ঘড়ি দেখে। বারোটা বাজতে এখনো কুড়ি মিনিট বাকি।ফোন করতে পারে রফিক। কান্না ভেজা কন্ঠ সে শোনাতে চায়না। অথচ ভালো করে জানে ফোন আসবে না।

৬.

ড্রেসিং টেবিলে রাখা ফোন হাতে নিতে নিতে দেখে নিজেকে। আরেকটু পর পৃথিবীর হিসেব মতো তার জীবনে সাতাশ তম বছরের শুরু হবে। চোখে কাজল পরে। রাতে কাজল পড়তে ভালো লাগে তার। সকালে চোখের আশপাশ কাজল ছড়িয়ে চোখদুটো আরো কালো আর ঘন দেখায়।চুলে হাত দিয়ে ঠিক করে নিতে নিতে খেয়াল করে অযত্নে কেমন রুক্ষ হয়ে উঠেছে। হঠাৎ কি মনে হয় ফেসবুক খোলে সে। দেখবে রফিক অনলাইনে আছে কিনা। হ্যাঁ রফিকের আইডিতে সবুজ টিপ জ্বলজ্বল করছে।
ইনবক্স দেখে কৌতুহলী হয়ে। রফিকের কোনো মেসেজ নেই। করতেও পারে। সময় আছে।

আনমনে ফেসবুকের নিউজফিড ঘুরতে থাকে। রাতে ঘুমের ওষুধটা ইচ্ছে করেই বাদ দিয়েছে আজ। না এলো ঘুম কীইবা এমন ক্ষতি হবে। বহু রাত সে না ঘুমিয়ে, জেগে কাটিয়েছে। বিছানার এক পাশে বালিশে মাথা থাকে তার, সেই যেন বালিশ হয়ে যায়। বাতি জ্বালিয়ে বই পড়লে রফিক বিরক্ত হয়। কানে ইয়ারফোনে গান শুনলে রফিকের ঘুমের সমস্যা হয়। তখন নিজেকে বিছানার বালিশ চাদর মনে হয় তার।

নিউজফিডে পিপল ইউ মে নো’তে সেই বই লেখকের নাম আসে। আগ্রহবোধ করে সে। তার প্রফাইলে যায়। লেখা গুলো পড়ে। একটু কঠিন মনে হয়। কিন্তু সরতে পারেনা। মনোযোগ দেয় এবার। একবার পড়ার পর মনে হয় ঠিক ধরা যাচ্ছেনা কথার অর্থ। জীবনান্দকে নিয়ে লিখতে গিয়ে যেন সমস্ত সাহিত্য জগৎ একোণ ওকোণ ছুঁয়ে আসছেন একটু একটু করে। কঠিন কথা গুলো সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। আবার কেমন ঘুরিয়ে সহজ কথা গুলো নিয়ে গভীর চলে যাচ্ছেন! আশ্চর্য লাগে বনলতার। কথার যাদুতে আচ্ছন্ন করা লেখকের ধর্ম। কথার জালে জড়িয়ে পাঠককে বিভিন্ন পথ ভ্রমণ করানোয়, পাঠকের তেষ্টা তীব্র করেন লেখক আবার তাকে পরিপূর্ণ তৃপ্ত করার দায়ও লেখকের। আনমনে অস্ফুটে বনলতা একবার বলে – অদ্ভুত! বেশ কয়েকটি পোস্টে লাইক দিয়ে যায়। নড়েচড়ে বসে সে। সময় দেখে। বারোটা বাজতে একমিনিট বাকি। রফিক ফোন করছেনা, মেসেজও দেয়নি। ঠোঁট বাঁকিয়ে মনেমনে বলে না দিক। কারোর মনে থাকার দরকার নেই।

সচেতন হয়ে বনলতা লেখকের প্রফাইলের ছবিটি আবার দেখে। তারপর রিকোয়েস্ট অপশন টাচ করে। যদিও রফিক বলেছে কাউকে কখনও রিকোয়েস্ট দেবেনা। কোনো ভদ্রমহিলা রিকোয়েস্ট দেয়না আগ বাড়িয়ে। আরো বলেছে নিকট আত্মীয় স্বজন ছাড়া কারো রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করবেনা। বনলতা কথা কম বলে তবে শোনে মন দিয়ে। আজ প্রথম সে রফিকের কথার বাইরে গেলো। হাত কাঁপছে, নিচের ঠোঁট একটু দাঁতে চেপে ধরে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দিলো।

যদি লেখক এক্সেপ্ট না করেন। হয়তো করবেন না। বনলতার টাইমলাইনে কেবল কবিতা। বিভিন্ন কবির। নতুন করে প্রেমে পড়েছে কবিতার। তাই যখন যে কবিতা ভালো লাগে তার থেকে কয়েক লাইন নিয়ে পোস্ট দেয় সে। সময় দেখে আবার। বারোটা বেজে পাঁচ সময়। খাটের পেছনের অংশে হেলান দিয়ে বসে চোখ বোজে সে। হাতের মুঠোয় ফোন ভাইব্রেট করে। চমকে ওঠে বনলতা। রফিক শেষ পর্যন্ত! না রফিক নয়। লেখক এক্সেপ্ট করেছেন তার রিকোয়েস্ট।

এভাবে চমকিত হয়নি বনলতা বহুদিন। কবে শেষ খুশিতে সে নিজে থেকে হেসে ফেলেছিলো মনে নেই। যেটুকু হাসি সবটাই লোক দেখানো। উত্তেজনায় সোজা হয়ে বসে দু’হাতে ফোন কোলের মাঝে রেখে তাকিয়ে থাকে মোবাইল স্ক্রিনে। এতোটা আশা করেনি। কি মনে করে মেসেঞ্জারে গিয়ে লেখককে সে মেসেজ লিখলো – – – ধন্যবাদ।

প্রায় সাথে সাথেই ফিরতি মেসেজ এলো
– আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

ঝটপট সে লেখে
– কেন! আমাকে ধন্যবাদ কেন?
উত্তর আসে
– বন্ধু হলেন তাই।
অবাক হয়ে বনলতা লেখে
– আপনি হননিতো। আপনি আমাকে এক্সেপ্ট করেছেন!
পাল্টা জবাব আসে
– তাতে কি বন্ধু হলেন না?
বনলতা লেখে
– হ্যাঁ হয়েছি তো!
আর কি লিখবে খুঁজে পায়না সে। ভেতরে একটা আলোড়ন অনুভব করে। এই আলোড়নের কারণ খুঁজে হাতড়াতে থাকে বনলতা। তখন ওপাশ থেকে লেখা আসে
– রাত হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়ুন। শুভরাত্রি!

হঠাৎ তাড়াতাড়ি বনলতা লিখল

— শুনুন

ওপ্রান্ত থেকে

— বলুন

— আজ আমার জন্মদিন। এখনো কেউ উইশ করেনি। আপনি কী আমাকে উইশ করবেন?

সেন্ড করেই বনলতার নিজের উপর রাগ হলো। এটা কেমন হ্যাংলামি করলো সে!

ওপ্রান্ত থেকে এলো

— প্রিয় বনলতা, শুভ জন্মদিন। খুব ভালো লাগলো যে আমি প্রথম বারের মতো এমন সুন্দর একজন মানুষকে শুভ জন্মদিন বলার সুযোগ পেলাম। আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হবেন, মিলিয়ে নিয়েন, আজ বললাম…

এখন কী লিখবে ভেবে পায় না বনলতা।দুচোখ ভেসে যাচ্ছে। ফোনের স্ক্রিনের লেখা গুলো অস্পষ্ট হতে হতে মুছেই যায় দৃষ্টি থেকে —

আরও পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত